বরিশালে ঘূর্ণিঝড় মোখার বড় ধরনের কোন প্রভাব দেখা না গেলেও থেমেত থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আজ রোববার দুপুর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। তবে গত দুই দিন ধরেই বরিশালের আকাশ মেঘলা ও গুমোট ভাব বিরাজ করছিল।
অন্যদিকে মোখার প্রভাবে বরিশাল বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে জানিয়ে বরিশাল আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মাসুদ রানা রুবেল বলেন, ‘মোখার প্রভাবে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বরিশাল শহরে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। বেলা সোয়া ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। ঘূর্ণিঝড় মোখা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মোংলা থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করে। এটি কক্সবাজার থেকে মিয়ানমারের উত্তর অঞ্চল দিয়ে অতিক্রম শুরু করে। পর্যায়ক্রমে এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বিকেল থেকে সন্ধ্যার দিকে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করবে।’
মোখার প্রভাবে বরিশালের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের ৫ থেকে ৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বরিশাল নদীবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে, মোখার প্রভাবে বরিশাল থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ছোট বড় সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক।
বরিশাল সদর নৌ-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল বলেন, নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি স্থানে মাইকিংয়ের মাধ্যমে মাছ ধরার নৌকা, যাত্রীবাহী ট্রলারসহ সবাইকে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বরিশালের উপ-পরিচালক শাহাবুদ্দিন মিয়া জানান, বরিশালে আমরা ব্যপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি মোখা মোকাবিলায়। আমাদের সেচ্ছাসেবকরা এখনও কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন।
বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান জানিয়েছেন, বরিশাল অঞ্চলের মানুষ সংগ্রামী মানুষ, এরা ঝড়-বৃষ্টির সাথেই লড়াই করে বেচে আছে। সরকারী-বেসরকারী সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি, ইনশআল্লাহ এবারের ঘুর্ণিঝড়ে বরিশালে বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হবে না এবং কোন প্রাণহাণী হবে না।