এম.এস.আই লিমন//-
[ আপন ভাই,ভাইপো ছাড়াই নির্বাচনি মাঠে কিস্তিমাত করছেন খোকন সেরনিয়াবাত ]
আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবং পুত্র সাদেক আবদুল্লাহ ব্যাতিরেকেই আবুল খায়ের ওরফে (খোকন সেরনিয়াত) নির্বাচনি বৈতিরনির মাঠে কিস্তিমাত করে চলেছেন। সেই আ,লীগের মনোনয়ন পাবার পর থেকেই একে একে বরিশালের রাজনীতির মাঠ জুরে কেবল খোকন সেরনিয়াতের জয়জয়কার প্রতিফলিত হচ্ছে। ঢাকা থেকে মনোনয়ন নিয়ে বরিশাল আসা, সেখানে বরিশাল বাসির পক্ষ থেকে রাজকীয় সংবর্ধনা এবং পরবর্তীতে আপন বড় ভাই বরিশালের আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অবিভাবক খ্যাত আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি বা তার বড় পুত্র বরিশালের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর কোন রকম সহযোগিতা ছাড়াই নিজ সচ্ছ ইমেজকে কাজে লাগিয়ে অদ্যাবধি অন্যান্য প্রতিদন্দ্বী প্রার্থীদের পিছনে ফেলে আলোচনার শীর্ষে অবস্থান করছেন আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। বিশ্লেষকরা অবশ্য এর পিছনে কিছু কারন খুঁজে পেয়েছেন। তারমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শিকতার সিদ্ধান্তকে প্রথম প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। বরিশালে মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে সবদিক থেকেই এগিয়ে ছিল সাদিক আবদুল্লাহ এমনটাই সর্বমহলে আলোচনায় ছিলো। মনোনয়ন বোর্ডের মধ্যেও ছিল আপন পিতা এবং আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতার সুপারিশ। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত সবাইকে অনেকটা হকচকিয়ে দেয়। তবে তিনি যে ভুল সিদ্ধান্ত নেয়নি তার প্রমান মেলে খোকন সেরনিয়াবাত বরিশালে এসে মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে যে সব এলাকায় সাধারন মানুষের সাথে মিশেছেন সকলেই বিনয়ি নম্র এই ব্যাক্তিটিকে সানন্দে গ্রহন করেছেন। পাশাপাশি তিনি বরিশাল আঃলীগের বড় একটি অংশকে পাশে পেয়েছেন। যারা নিজ থেকেই এই নব্য নেতৃত্বকে পাশে নিয়ে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে সকল কর্মসূচির সম্পাদন করছেন। এ বিষয়ে মুখ্য ভুমিকা পালন করছেন বরিশাল ৫ (আসন) এর সংসদ সদস্য এবং বরিশাল জেলা আঃলীগের সহ সভাপতি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম। জানা গেছে তিনি প্রথম থেকেই খোকন সেরনিয়াবাতের একজন সুভাকাঙ্খি হিসাবে ছিলেন। বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত বরিশালে সর্বপ্রথম আওয়ামী লীগের অবস্থান তৈরীর সূচনা হয়েছিল বর্তমান সাংসদ পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী’র হাত ধরেই। বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার এর সাথে প্রতিদন্দিতা করে বিএনপির ঘাটিতে সর্বপ্রথম লক্ষ ভোটের অর্জন আঃলীগ জাহিদ ফারুক শামীমের মাধ্যমেই পেয়েছিলো বরিশাল আওয়ামীলীগ।তাছাড়া বরিশালের সাবেক প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরনের অনুসারি এবং সে সময়কার মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিম, বিএম কলেজের ছাত্র সংসদ এর সাবেক ভিপি মোঃ মঈন তুষার এবং মহানগর ছাত্রলীগ এর সাবেক সাধারন সম্পাদক অসিম দেওয়ানসহ সাদেক আবদুল্লাহর সময় সুবিধা বঞ্চিত নির্যাতিত নেতৃবৃন্দ কোন রকম রাক ঢাক ছাড়াই একবাক্যে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী’র নেতৃত্বে খোকন সেরনিয়াবাতের পাশে এসে দাড়িয়েছেন। ফলে ,প্রথমবারেই খোকন সেরনিয়াত সল্প সময়ে তার অবস্থান সু-দৃড় করতে পেরেছেন। ইতোমধ্যে বরিশালের মেয়র পদে আসিন হতে জাতীয় পাটি, ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলন (চরমোনাই) এবং সতন্ত্র পদে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন দশজন, এদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন এর যাচাই বাছাই এ ৬ জনের মনোনয়ন বৈধতা পায়। তারা তাদের নিজ নিজ দল বা অবস্থান থেকে অআনুষ্ঠানিক নির্বাচনি প্রচারনা চালাচ্ছেন। তবে, সাধারন মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশি উৎসাহ এবং আগ্রহ দেখা যাচ্ছে খোকন সেরনিয়াবাতকে নিয়ে। অবশ্য দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু’র ভাগ্নে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত মিডিয়াকে জানিয়েছেন তারা দুই ভাই এক হয়ে সারাদেশে চলমান উন্নয়নের ধারা অনুযায়ী বরিশাল কে ঢালাওভাবে নতুন প্রজন্মের জন্য স্মার্ট বরিশাল বিনির্মান করবেন। যার নির্ভরতা বিগত দিনের বরিশাল সদর আসনের উন্নয়ন মূলক দৃষ্টান্ত কাজের জন্য জাহিদ ফারুক এমপির কথায় জনগন এককথায়ই সিটি মেয়র প্রার্থীকে স্বাদরে গ্রহন করে নেয়।আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক (মন্ত্রী)আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি ‘র বড় ছেলে বর্তমান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু দল বেছে নেয় তারই আপন চাচা আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে। এরপর ৯ মে নির্বাচন পরিচালনায় উপদেষ্টা কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন খোকন সেরনিয়াবাত। বিগত ২০১৮ সালে এবং আসন্ন সিটি নির্বাচনে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য হয়েও আপন ছোট ভাইর পক্ষে না দাড়ালেও ছোট ভাই নৌকা প্রতিক নিয়ে বড় ভাই আবুল হাসানাতের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে ভুল করেনি। বড় ভাইয়ের প্রতি আপন ছোট ভাইয়ের সম্মান আর ভালবাসার প্রতিক হিসেবে সেই কমিটিতে প্রধান করেন বড় ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপিকেই। তবে তাদের অনুসারী কাউকে কমিটিতে রাখা হয়নি।এর মধ্যে বরিশাল নগরীতে ভোটের প্রচার চালাতে গিয়ে দুই দফায় হামলার শিকার হয়েছে নৌকার সমর্থকরা। খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারীদের অভিযোগ, যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত তারা সবাই সাদিক আব্দুল্লাহর ব্যক্তী অনুসারী। আওয়ামী লীগ সংগঠন সাংগঠনিকভাবে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন প্রবিন নেতৃবৃন্দরা। নির্বাচনের বাকী আছে ১৫/১৬ দিন কিন্তু এর মধ্যে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকার হয়েও পাশে পায়নি আপন ভাই ভাতিজা সহ তাদের অনুসারী বর্তমান নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সহ সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা কোন নেতাকর্মীদের। ভার্চুয়ালী কিংবা মিডিয়ায় নৌকার পক্ষে সংগঠনের স্বার্থে কাজ করার বুলি আওড়ালেও বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণই ভিন্ন। মূখে মধু অন্তরে বিষ এর মতো এখানকার চলমান আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগ সংগঠনের জন্য কতটা ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়াতে পারে তা ভবিষ্যত সিটি নির্বাচনের ফলাফলেই প্রকাশ পাবে বলে অভিমত বিশ্লেষকদের। অপরদিকে নির্বাচন ছাড়া রাজনৈতিক যে পরিবেশ বরিশালে সৃষ্টি হয়েছে এর সুফলও আওয়ামী লীগ সংগঠনের বড় একটি অর্জন বলেও মনে করছেন তারা। সবশেষ সকলকে নিয়েই নতুন বরিশাল গড়ার লক্ষ্যে আজীবন কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত এর ছোট ছেলে আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।