মোঃ বশির আহাম্মেদ
বাকেরগঞ্জ সংবাদদাতা
বরিশালের বাকেরগঞ্জের নিয়ামতি ইউনিয়নের কাফিলা গ্রামের লাবিব বাহিনী কর্তৃক ভিক্ষুকের
টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। গত ২৪ মে ২৩ এ ঘটনা ঘটে। এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি পুলিশের তৎপরতায় এরই মধ্যে ওই ভিক্ষুকের ছিনতাই হওয়া টাকার এক অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ভিক্ষুক আঃ লতির হাওলাদার (৭০)
উপজেলার পাদ্রীশিপপুর ইউনিয়নের পাদশিপুর গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, পাদিশিপুর গ্রামের হতদরিদ্র আঃ লতিফ হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। একটি চটের ব্যাগ, একটি লাঠি ও টিনের কৌটা নিয়ে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষা করতেন তিনি। চুরি বা হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে ভিক্ষা করে জমানো টাকা চটের ব্যাগে করে নিজের কাছেই রাখতেন তিনি।
নিয়ামতি ইউনিয়নের কাফিলা গ্রামের স্থানীয়রা বলছেন, সারা দিন ভিক্ষা করে বিকেলে তিনি কাফিলা গ্রামের যেখানে অবস্থান করতেন সেখানে ফিরছিলেন।
তাকে অনুসরণ করা কাফিলা গ্রামের সৈয়দ রেজওয়ান এর পুত্র সৈয়দ লাবিব,মকসেদ মোল্লার পুত্র শামিম মোল্লা, হাসেম মোল্লার পুত্র বশির মোল্লা, মজিবুর হাওলাদারের পুত্র শিপন, সহ একদল বখাটে যুবক অস্ত্রের মুখে জিম্মি করেন ফিল্মি স্টাইলে দেড় বছর ভিক্ষা করে জমানো ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এ সময় ভিক্ষুক ডাক চিৎকার করলে কিল-ঘুষি মেরে টাকার থলে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে চলে যায় । ভিক্ষুক আব্দুল লতিফ অর্থ হারানোর কষ্টে কান্না করতে থাকলে স্থানীয় আঃ ওহাব খানের পুত্র মোঃ ফারুক হোসেন খান তাকে সাথে নিয়ে নিয়ামতি ও পাদ্রীশিপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কে অবহিত করেন পরবর্তীতে ভিক্ষুক আঃ লতিফ বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা লাবিব সহ তার বাহিনীর কাছথেকে ৪০ টাকা উদ্ধার করে ভিক্ষুক আব্দুল লতিফকে ফেরত দেন।এই ঘটনার জেরে গত ৯ জুন রাত ৮ ৩০ সে লাবিব বাহিনী ফারুক হোসেন খান কে তার এনজিও থেকে ধরে এনে কাফিলা বাজারে প্রকাশ ঝাড়ু দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন এবং তার কাছে থাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেন এ বিষয়ে ফারুক আহমেদ বলেন আমি এনজিওর কালেকশন শেষ করে অফিসে বসে ছিলাম এমত অবস্থায় লাবিব বাহিনী আমার অফিসে আসে এবং আমাকে বলে আমাদের বিরুদ্ধে কখনো কেউ অভিযোগ করেনি তোর এত বড় সাহস তুই ভিক্ষুককে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিশ। তোকে মেরে ফেলবো একপর্যায়ে আমার কলার ধরে বাজারের মধ্যে নিয়ে এসে শত শত লোকের মাঝে ঝাড়ু ও জুতা দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে স্থানীয়রা ওদের ভয়ে আমাকে উদ্ধার করতে আসেনি ওরা বাজার থেকে চলে গেলে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে ফার্মেসিতে নিয়ে চিকিৎসা দেয় পরবর্তীতে আমি বাকেরগঞ্জ থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি লে তা এজাহার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেন। সকল আসামী আটক না করায় আমি আমার জীবন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তিনি আরো জানান এই সন্ত্রাসী বাহিনী একটি পূর্বে বাজারে বসে প্রকাশ্যে লাঠি সোটা ঝাড়ু জুতা দিয়ে সাবেক কৃষি কর্মকর্তা আলহাজ্ব আবুল হোসেন শরীফ, অবসরপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর আঃ খালেক এএসআই নাসির উদ্দীন, গ্রাম পুলিশ শাজাহান, সমাজসেবক আকবর আলি জিয়াউল হক শরীফ আনসার খলিফা সহ একাধিক ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত করেন। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ডাকাতি মাদক চুরি চাঁদাবাজি সহ একাধিক মামলা চলমান। তাদের ভয়ে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। কাফিলা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ টিটু খান মুঠো ফোনে সংবাদ মাধ্যমকে জানান জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধী বাজারে তার অফিসে এসে এই সন্ত্রাসীরা টেবিলের উপরে পিস্তল রেখে তাকে হত্যার হুমকিসহ চাঁদার দাবি করেন। এছাড়াও কিছুদিন পূর্বে কাফিলা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী সুভাষচন্দ্র দাস এর দোকানে গিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়, পান ব্যবসায়ী সমির ও সুবাস এর কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় । নিয়ামতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম দুলাল সংবাদ মাধ্যমকে জানান এই চক্রটি চাঁদাবাজি মাদক চুরি ডাকাতি ছিনতাই জুয়া আসর বসানোর সহ সকল ধরনের অপরাধের সাথে সংক্ষিপ্ত একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এরা এসব অপকর্ম করেও বেঁচে যাচ্ছেন। অজানা কারণে থানাপুলিশ তাদেরকে কিছুই করতে পারে না, স্কুল-কলেজ গামী-ছাত্রীরা তাদের ভয়ে ঠিকমতো স্কুলে যেতে পারেনা।
পাদ্রী শিপ পুর ইউপির চেয়ারম্যান জাহিদুল হাসান বাবু বলেন, ভিক্ষুককে মারপিট করে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি আমাকে অবহিত করলে আমি ভিক্ষুক আব্দুল লতিফকে থানা পুলিশের সহযোগিতা নিতে বলি থানা পুলিশ লাবিব বাহিনীর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করে আমার উপস্থিতিতে ভিক্ষুক আব্দুল লতিফেরদের দিয়েছেন। ভিক্ষুক জানান তার থলেতে প্রায়৭০ হাজার টাকা ছিল।৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করা গেলেও বাকি টাকা উদ্ধার করা যায়নি।অভিযুক্তরা আত্মগোপনে থাকায় তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নেয়ামতি বিটের এএসআই নুরুল আমিন ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে জানান অভিযোগ পাওয়ার পরে লাবিব বাহিনীর কাছ থেকে আমরা নগদ চল্লিশ হাজার টাকা উদ্ধার করে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও দুই ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে ভিক্ষুককে দি। ভিক্ষুক পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ না নেয়ায় মামলা নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম মাকসুদুজ্জামান সংবাদ মাধ্যমকে জানান ভিক্ষুকের টাকা ছিনতাই এর ঘটনায় ৪০ হাজার টাকা আমরা উদ্ধার করেছি এবং ফারুক খানকে মারধর ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় বাকেরগঞ্জ থানায় রেগুলার মামলা নেওয়া হয়েছে যাহার জিআর ১৭৪/২৩ এবং ইতিমধ্যে একজন কে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতের পাঠানো হয়েছে।