নবনির্বাচিত বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বঙ্গবন্ধু’র ভাগ্নে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত) দায়িত্ব গ্রহণ করবেন আগামী ২৪ অক্টোবর। আগামী ২৩ অক্টোবর বর্তমান (চতুর্থ পরিষদের) মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। নিয়ম অনুযায়ী ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন নতুন মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত। নগরবাসীর দাবি নগরীর উন্নয়ন বাস্তবায়নে নতুন মেয়রকে দ্রুত দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া উচিত।
নগরীর একাধিক বাসিন্দাদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, নবনির্বাচিত মেয়র গত ৩ জুলাই শপথ নিয়েছেন। এখন দায়িত্বভার গ্রহণ করে নগরীর উন্নয়নে মনোনিবেশ করবেন। শুনেছি, পূর্বের মেয়রের সময়কাল শেষ হওয়ার পর তিনি দায়িত্ব নেবেন। তবে আমাদের দাবি, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে পিছিয়ে পড়া নগরীর উন্নয়নে নতুন মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতকে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর করা হোক।সচেতন নগরবাসীর দাবি, উন্নয়ন বঞ্চিত এবং পিছিয়ে পড়া একসময়ের প্রাচ্যের ভেনিসখ্যাত বরিশাল নগরীর হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ মনোনীত খোকন সেরনিয়াবাত বলেছেন, তাকে নির্বাচিত করা হলে “নতুন বরিশাল” গড়বেন। এছাড়াও তার নির্বাচনী অনেক প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও চাচ্ছেন তার ফুফাতো ভাই খোকন সেরনিয়াবাতের মাধ্যমে নতুন বরিশাল গড়তে। যেকারণে শপথ গ্রহণের দিন প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন বরিশাল নগরীর জন্য চলতি অর্থবছরে—টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দীর্ঘদিনের অবহেলিত বরিশাল নগরীকে উন্নয়নের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নবনির্বাচিত মেয়র যতো দ্রুত দায়িত্ব গ্রহণ করবেন আওয়ামী লীগের জন্য ততই মঙ্গল হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক’র (সুজন) জেলার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, নবনির্বাচিত মেয়রের কাছে নগরবাসীর প্রত্যাশা অনেক। যে প্রত্যাশার কারণে দলীয় চরম বিরোধের মধ্যেই রাজনীতিতে সম্পূর্ণ নতুন মুখ খোকন সেরনিয়াবাতকে সর্বস্তরের ভোটাররা বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, নগরীর উন্নয়নে যে স্থবিরতা ছিল, তা কাটাতে নবনির্বাচিত মেয়র নগরবাসীর মতামতের ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আমরা শতভাগ আশাবাদী।
বর্তমান পরিষদের মেয়র সম্পর্কে তিনি বলেন, চতুর্থ পরিষদের বর্তমান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ তার নির্ধারিত সময় পর্যন্ত থাকতেই পারেন। তবে চাইলে তিনি দ্রুতসময়ের মধ্যে নবনির্বাচিত মেয়রকে দায়িত্বও বুঝিয়ে দিতে পারেন। এটা সম্পূর্ণ তার এখতিয়ার।
সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে খোকন সেরনিয়াবাতের মনোনয়ন ঘোষণায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন নগরীর সর্বস্তরের মানুষ। একমাত্র নগরীর উন্নয়নের আশায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীকে গত ১২ জুনের নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করেন নগরবাসী।
খোকন সেরনিয়াবাতের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার বলেন, দায়িত্বগ্রহণের পূর্বে সবধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে চান নবনির্বাচিত মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত। সেহিসেবে আগামী ৮ জুলাই টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধীতে নবনির্বাচিত মেয়রের নেতৃত্বে ৩০টি সাধারণ ও দশটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত কাউন্সিলরগণ শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে চতুর্থ পরিষদের (বর্তমান) মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। ওই বছরের ২৪ অক্টোবর তিনি সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
আগামী ২৩ অক্টোবর তার ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হবে। এবারের নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হন। তারস্থলে মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)।