শিগগিরই মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক কমিটি বিভিন্ন ওয়ার্ড ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের এসব কমিটি ঘোষণা করার চিন্তা করছে। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বলছে, এভাবে কমিটি ঘোষণা করা অবাস্তব, ভিত্তিহীন।
ব্যাক ডেট অর্থাৎ পেছনের তারিখ দেখিয়ে বরিশাল মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠন করে তা ঘোষণার পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে সদ্য বিলুপ্ত মহানগর ছাত্রলীগের কমিটির বিরুদ্ধে।
শিগগিরই মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক কমিটি বিভিন্ন ওয়ার্ড ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের এসব কমিটি ঘোষণা করার চিন্তা করছে। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বলছে, এভাবে কমিটি ঘোষণা করা অবাস্তব, ভিত্তিহীন।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার সময় নৌকার কর্মীকে মারধরের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন তৎকালীন মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না। এর পরপরই মহানগর ছাত্রলীগের ওই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্র। নির্বাচন শেষে রইজ আহম্মেদ মান্না কারামুক্ত হন।
তিন মাস মেয়াদের আহ্বায়ক কমিটি গত বছরের ২৩ জুলাই গঠিত হলেও কোনো ইউনিট কমিটি গঠন করতে পারেননি তারা। কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর এখন পেছনের তারিখে কলেজ ও ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণার পাঁয়তারা করছেন মান্না। ড্রাফটও করা হয়ে গেছে বিএম কলেজসহ গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলোর কমিটির।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর একাধিক ঘনিষ্ঠ অনুসারী।
ছাত্রলীগ সূত্র বলছে, গত বছর কমিটি গঠনের পর বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান সাদিক আব্দুল্লাহর বাসায় বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটিতে পদ প্রত্যাশীদের নিয়ে আলোচনা সভা হলেও কোনো কমিটিই গঠন করতে পারেনি মহানগর ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটি। মহানগর ছাত্রলীগের যে কমিটি সদ্য বিলুপ্ত করা হয় সেই কমিটির সবাই সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারী।
মহানগর ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা আবিদ হাসান রানা বলেন, এটা অবৈধ। ব্যাক ডেট দিয়ে কমিটি করার পাঁয়তারা নির্বাচনের পর থেকেই চলছে। তারা সময় সুযোগ পাচ্ছে না। শুনেছি খুব দ্রুত নাকি অবাস্তব এসব কমিটি ঘোষণা করবে মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক বিতর্কিত কমিটি। এই ধরনের পাঁয়তারা তারা করতে পারে, যাদের মধ্যে ছাত্ররাজনীতির জ্ঞান নেই।
বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য অসীম দেওয়ান বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরেই নগরীতে গুঞ্জন চলছে মহানগর ছাত্রলীগের অধীনস্থ ইউনিটগুলোর কমিটি গঠন করা হবে। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে মহানগর ছাত্রলীগেরই তো কমিটি নেই।
তিনি বলেন, যে কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে সেই কমিটি কীভাবে ইউনিট কমিটি গঠন করে। তারা খুব তোড়জোর করছে পেছনের তারিখ দিয়ে কমিটিগুলো ঘোষণা করার। এটা যদি হয়েই যায় তাহলে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহি ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে হেয় করবে তারা।
সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্র সংসদের ভিপি মঈন তুষার বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তো বিধি-বিধান রয়েছে। যাদের ছাত্রলীগ থেকে বিতারিত তারা আবার ছাত্রলীগের কমিটি করে কীভাবে। আমাদের কাছে খবর রয়েছে অবৈধভাবে কমিটিগুলো ঘোষণা করে প্রকাশ্যে আনা হবে। ছাত্রলীগের ইজ্জ্বত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা এসব লোকগুলো এবং এদের পেছনে যারা রয়েছে তাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ থেকে আজীবন বহিষ্কার করলে কলংকমুক্ত হবে আমাদের প্রাণের সংগঠন।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাবেক আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্নার ফোনে কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেনি। তবে ওই কমিটির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাইনুল হাসান বলেন, এসব বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আসলে এভাবে কমিটি গঠন করাটা অবাস্তব। বাংলাদেশে ছাত্রলীগের এমন কোনো নজির নেই যে বিলুপ্ত হওয়া কমিটি ব্যাক ডেট দিয়ে তাদের অন্তর্ভুক্ত কমিটি ঘোষণা করে। এরকমটা যদি বরিশালে হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে যাদের জড়িত পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।