বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় মোটরসাইকেল প্রবেশ করলেই গুনতে হচ্ছে ৩০ টাকা। কারণ জানতে চাইলে তা বেড়ে দাড়ায় এক হাজার টাকায়। দাবিকৃত টাকা না দিলে চাকা পাংচার করে দেওয়া, হেলেমেট রেখে দেওয়া এমনকি শারীরীকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এমন অভিযোগ মোটরসাইকেল গ্যারেজ ইজারাদারের বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে হাসপাতাল পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন হয়রাণির শিকার মেহেদী হাসান নামে এক যুবক।
অভিযোগকারী মেহেদী হাসান জানান, শনিবার নিজের মোটরসাইকেলে দুই বছরের মেয়কে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যান শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালের মাঝখানের গেট সংলগ্ন মাঠের পাশে মোটরসাইকেল ও হেলমেট রেখে বর্হিবিভাগে ডাক্তার দেখিয়ে এসে হেলমেট পান না। পরে জরুরী বিভাগের গেটের কাছে গ্যারেজে খোঁজ নিলে প্রথমে দায়িত্বরতরা অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে হেলমেট ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ৩০ টাকা দাবী করেন। কারণ জানতে চাইলে গ্যারেজের লোকজন অশালীন ব্যবহার শুরু করেন এবং একহাজার টাকা দাবী করেন। অন্যথায় হেলমেট ফিরিয়ে দিবে না বলে জানান।
অভিযোগকারী আরো জানান, গ্যারেজের লোক পুরো হাসপাতালে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে যে গাড়িতে হেলমেট পায় সেখান থেকে নিয়ে এসে মানুষদের জিম্মি করে টাকা আদায় করে। এটি সম্পূর্ণরূপে অবৈধ একটি কাজ। হাসপাতালের নির্ধারিত গ্যারেজ রয়েছে। সেখানে গাড়ি না রাখলে গ্যারেজ ফি দিতে হবে কি জন্য? মেহেদী হাসান বলেন, হাসপাতালে সকলেই জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য যায় সেখানে এমন জিম্মিকারী চক্র মানুষকে দিনের পর দিন হয়রানি চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমি অনুরোধ করলেও টাকা না পাওয়া পর্যন্ত হেলমেট ফিরিয়ে দিবে না বলে জানায় এবং সর্বশেষ ওরা হেলমেটটি রেখে দেয়।
হয়রাণির শিকার আরেক রোগী স্বপন বলেন, কয়েকদিন আগে আমার গাড়ি হাসপাতালের মধ্যে রেখে চিকিৎসা নিতে যাই। এসে দেখি গাড়ির চাকা পাংচার করে দেওয়া হয়েছে। একদিকে আমি অসুস্থ অন্যদিকে হাসপাতালের গ্যারেজের লোকজনের এই অমানবিক কাজ সত্যিকার অর্থেই আমাকে ভোগান্তিতে ফেলেছিল।
জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মজিরব রহমান গ্যারেজের ইজারা পাইয়ে দেন তার ভাই ইমনকে। ইমন আরো কয়েকজন লোক নিয়ে গ্যারেজ চালান। মূলত কাউন্সিলরের পরিচয় দিয়ে প্রতিদিন মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করেন তারা।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মজিবর রহমান বলেন, আমার ভাই গ্যারেজ ইজারা নিয়েছে। সেখানে মানুষকে হয়রানি করা তাদের উচিত না। যারা আসে তারা রোগ-শোক নিয়ে আসে এটিতো স্মরণ রাখতে হবে। গ্যারেজের স্টাফরা এসব কাজ করলে অবশ্যই গর্হিত কাজ।
হাসপাতালের পরিচালক ডা: এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, গ্যারেজ ইজারা দিয়েছি মোটরসাইকেলগুলো যেন শৃঙ্খলভাবে থাকে, কোন কিছু খোয়া না যায় সেসব পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে। যারা গ্যারেজে গাড়ি রাখবে তারা গ্যারেজ ফি দিবে। যারা রাখবে না তাদের কাছ থেকে বাধ্য করে টাকা রাখার মত অনিয়ম করতে গ্যারেজ ভাড়া দেইনি। আমি ইজারাদারকে বলেছি ঐ অভিযোগকারীকে হেলমেট কিনে দেয়ার জন্য। তাছাড়া সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানি করলে তার ইজারা বাতিল করা হবে।