শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুর ট্রাফিক পুলিশের টাউন সাব ইন্সপেক্টর এক মোটরসাইকেল চালককে ৫ হাজার টাকা মামলা দেয়। ৫ হাজার টাকা মামলা দেয়ায় ওই মোটরসাইকেল চালক অজ্ঞান হয়ে পরে বলে জানা যায়। সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পরে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে। জানা যায়, ওই মোটরসাইকেল চালকের নাম মো. নেছার উদ্দিন জমাদ্দার। সে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার মাছুয়াকান্দি গ্রামের আব্দুল লতিফ জমাদ্দারের ছেলে। তিনি ভাড়ায় একজন মোটরসাইকেল চালক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়,সোমবার দুপুরে শরীয়তপুর শহর থেকে মোটরসাইকেল চড়ে গোসাইরহাটের দিকে যাচ্ছিলেন নেছার উদ্দিন। তাঁর মোটরসাইকেলে তিনজন ওঠায় শরীয়তপুর পৌরসভার মনোহর বাজার মোড় এলাকায় তাকে দাঁড় করান টাউন সাব ইন্সপেক্টর (টিএসআই) ফজলুল করিম। দেখতে চান সবধরনের কাগজপত্র। তবে সব কাগজপত্র ঠিক থাকলেও ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল। তাই টিএসআই ফজলুল করিম ওই মোটরসাইকেল চালককে ট্রাফিক আইনে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এসময় জরিমানার টাকার অংক দেখে নেছার উদ্দিন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে নেছার উদ্দিনের সঙ্গে থাকা দুই যাত্রী তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নেছার উদ্দিন বাড়িতে চলে যান।
এ ব্যাপারে টাউন সাব ইন্সপেক্টর (টিএসআই) ফজলুল করিম বলেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে মনোহর বাজার মোড়ে দায়িত্ব পালন করছিলাম। হঠাৎ করেই তিনজন একসাথে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। আমি তাদেরকে দাঁড় করাই এবং কাগজপত্র দেখতে চাই। সকল কাগজপত্র দেখার পরে তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করি। জরিমানার অঙ্ক দেখেই মাথা ঘুরে হঠাৎ করে পড়ে যান তিনি। আমরা তাঁর আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে জরিমানা কমিয়ে দেওয়ার বিষয়টি দেখবো।
শরীয়তপুর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. আবু সাঈদ বলেন, ব্যাপারটা আমি শুনেছি। ওই ব্যক্তি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল কিনা, কে জানে। তিনি এখন সুস্থ আছেন, বাড়িও ফিরে গেছেন।
তবে, মোটরসাইকেল চালক মো. নেছার উদ্দিন বলেন, আমি দুইজন যাত্রী নিয়ে শরীয়তপুর শহর থেকে গোসাইরহাটের দিকে যাচ্ছিলাম। যখন মনোহর বাজার মোড়ে যাই তখন ট্রাফিক স্যারে আমাকে দাঁড় করান। আমি স্যারকে বলছিলাম, যে আমি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাই। তবুও তিনি সবধরনের কাগজপত্র দেখতে চান। আমি দেখাইও, কিন্তু ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ চলে গেছে এটা জানতাম না। আমি তাকে অনেক অনুরোধ করি। কিন্তু সে তা মানেন না। তবুও তিনি আমাকে ৫ হাজার টাকা মামলা দেয়। ভাড়ায় গাড়ি চালাই, গরিম মানুষ। এতো টাকা কোথা থেকে দেব, এই চিন্তায় অজ্ঞান হয়ে যাই। তবে স্যারে বলেছেন, টাকা কমিয়ে দেবেন।