৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ দুপুর ১:৪৪

৫ বছর বিকল বরিশাল সিটির ৪২০ টি সিসি ক্যামেরা প্রতিশ্রুতি-তাগাদায়ও কাজ হয় না

বিশেষ প্রতিবেদক:-
  • আপডেট সময়ঃ মঙ্গলবার, আগস্ট ২২, ২০২৩,
  • 181 পঠিত

নগর পিতার আসনে আসিন হয়ে বিভাগীয় শহর বরিশালে ক্ষমতার পালাবদলে মেয়র এসেছেন আবার চলেও গেছেন। নগরবাসিদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় এনে সাবেক প্রয়াত মেয়র আহসান হাবিব কামাল বরিশাল মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ৪২০ টি সিটি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিলো। এর সাথে নগরভবনে করা হয়েছিল এর কন্ট্রোল রুম। তার পরে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র হিসেবে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়রের দায়িত্ব পালন করে আসলেও নজরে আসেনি এই সিসি ক্যামেরার বিষয়। ডিজিটাল বাংলাদেশের ডিজিটাল ব্যবহারে মশার লার্ভা খুজতে অত্যাধুনিক ড্রোন ব্যবহার আর রাতের নগরী চষে বেড়ানোর জনপ্রতিনিধিদের নাম আলোচনায় আসলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা নগরবাসীদের স্বার্থে ৫ বছরের মধ্যে দায়িত্বশীল কোন কর্তাব্যাক্তীর এ বিষয় নিয়ে গুরুত্ব দেয়ার মতো সামান্য আলোচনাও হয়নি। স্থানীয় নগরবাসিদের মধ্যে সচেতন মহল নীরব ভূমিকা কাটিয়ে একে একে খোলা মন্তব্য করা শুরু করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। তারা বলছে নগরপিতার দায়িত্বে সিটি বাসীর নিরাপত্তায় বসানো সিসি ক্যামেড়ার বিষয় টি এড়িয়ে যেতে পারে না এবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করতেও দাবী জানায় কেউ কেউ। ক্ষমতার চেয়ারে বসার পূর্বে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতির মধ্যে নিরাপত্তার বিষয়টি আগে আসলেও তা তাগেদা দিলেও কাজ হয়না বলে জানান সদর রোড এলাকার ব্যবসায়ী রেজাউল রহমান। তিনি আরো বলেন সাবেক প্রয়াত মেয়র আহসান হাবিব কামালের সময়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের পর পরই অচল কোটি টাকার সিসি ক্যামেরা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর তাগাদা দেয়ায় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অল্প দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে কিন্তু তাগাদা দিয়েও হয়নি এর কাজ।

জানা গেছে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের তত্ত্বাবধানে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় করে বসানো হয়েছিলো ৪২০টি সিসি ক্যামেরা। ক্যামেরাগুলো স্থাপনের কিছুদিন না যেতেই বেশিরভাগই অচল হয়ে যায়। ক্যামেরাগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা বিসিসি কর্তৃপক্ষের থাকলেও বিগত চার/পাঁচ বছরে তারা কোনো ধরনের খোঁজখবর নেয়নি।

বর্তমানে বেশিরভাগ সিসি ক্যামেরাগুলোর অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বিসিসি’র প্রকৌশল ও প্রশাসনিক দপ্তরের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আজও পর্যন্ত সিসি ক্যামেরাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ তো দূরে থাক, সামান্য খোঁজখবরও নেয়নি। মেয়র সাদিক ক্ষমতা গ্রহণের পর এনেক্স ভবন ও সিটি কর্পোরেশনের মূলভবনে কয়েকটি সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছেন মাত্র। এবং সেগুলো সচল-অচলের দিকে যথাযথ দৃষ্টি রেখেছেন।

তবে সরকারের এতগুলো টাকা খরচ করে ৪২০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হলেও নগরবাসীর কোন ধরনের উপকারে আসেনি এগুলো।

বিসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা একই সাথে প্রশাসনিক কর্মকর্তার চলতি দায়িত্বে থাকা স্বপন কুমার দাস বলেন, বিগত মেয়রের আমলে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল তবে তার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমার কোন কিছু জানা নেই।

সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নগরবাসীর সুবিধার্থে ৪২০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হলেও ক্যামেরাগুলো নগরবাসীর কোন ধরনের কাজেই লাগলো না। এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একাধিক নগরবাসী।

সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি প্রফেসর সাহ-সাজেদা বলেন, বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ক্ষমতার আমল ছিলো একনায়তন্ত্রের। তার এই খামখেয়ালীপনার কুফল ভোগ করছেন নগরবাসী। আর তিনি যদি নগরবাসীর কাছে জবাবদিহিতার কথা চিন্তা করত, তাহলে অবশ্যই সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে লাগানো সিসি ক্যামেরা গুলো রক্ষণাবেক্ষণ তারই করার কথা ছিলো।

এবিষয়ে কথা হয় বিসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ক্ষমতা আমলে ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় ৪২০ টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হলেও গত ৪-৫ বছর যাবৎ সবগুলো ক্যামেরাই অচল অবস্থায় রয়েছে। কি কারণে ক্যামেরাগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা হলো না তার কারণ জানেন না তিনি।

বাসদ নেত্রী ডাক্তার মনীষা চক্রবর্তী বলেন, জনগণের অর্থ ব্যয় করা এই সিসি ক্যামেরাগুলো নগরবাসীর কোন কাজেই লাগলো না। এটা জনগণের সাথে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বিসিসি। এটা বিসিসির ব্যর্থতাই মনে করছি। তাই অবিলম্বে এই ক্যামেরাগুলো সচল করে নগরবাসীর সেবার মান বাড়িয়ে দিবে বলে আমি আশাকরি।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন ...

এই বিভাগের আরো সংবাদ...
© All rights reserved © ২০২৩ স্মার্ট বরিশাল
EngineerBD-Jowfhowo