এম.এস.আই লিমনঃ
বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর তীর স্থায়ী সংরক্ষণসহ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৮০টি সমাপ্ত প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব প্রকল্প উদ্বোধন করেন।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরিশাল জেলা শাখার সহ-সভাপতি কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি ‘র সভাপতিত্বে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৮০ টি সমাপ্ত প্রকল্প এবং আরো অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরস্থাপন অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুখি সমৃদ্ধ একটি সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার দূরদর্শিতায় পূর্বের থেকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সফলতা অর্জন বৃদ্ধি পেয়েছে।জাতীয় মহান সংসদ এ সরকার দলীয় এবং বিরোধী দলের সংসদ সদস্য গন সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরাও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজের প্রশংসা করেন।দক্ষিণাঞ্চল তথা বরিশাল বাসী আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবে আপনার প্রতি। কীর্তণখোলা নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ এখন নিরাপদে নিশ্চিত ভাবে ঘুমাতে পাড়ে বেড়িবাঁধ উপহার দেয়ায়। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনে বর্তমান সরকারের অবদান অনস্বীকার্য।
এদিকে বরিশালের কীর্তণখোলা নদী রক্ষা বাঁধ প্রকল্প উদ্বোধন উপলক্ষে চড়বাড়িয়ায় শতাধিক জেলে নিজেদের নৌকা নিয়ে বেড়িবাঁধ সংলগ্নে নোঙর করেন।
নৌকাগুলো নানা রঙের বেলুন, জাতীয় পতাকা, আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দিয়ে সাজানো হয়। এ সময় কীর্তণখোলাপাড়ে মানুষের ঢল নামে।
হাজার হাজার মানুষ বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এসময় হাজারো মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি’র নাম নিয়ে জয়ের ধ্বনিতে স্লোগানে স্লোগানে লোকান্তরিত হয়ে অনুষ্ঠান মুখরিত করে রাখে।
এ সময় বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া প্রান্তে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে,বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথ, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য রুবিনা আক্তার মীরা, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী, জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল দক্ষিণ প্রধান প্রকৌশলী মোঃ মুজিবুর রহমান, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান,এসি মোঃনাসির উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিব হোসেন , উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মুশফিকুর রহমান শুভ।
সাবেক এমপি তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর,বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগ এর সহ সভাপতি এ্যাডঃআফজালুল করীম,বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডঃলষ্কর নুরুল হক, বরিশাল মহানগর আওয়ামী যুবলীগ এর আহবায়ক মোঃনিজামুল ইসলাম নিজাম, যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব মাহমুদুল হক খান মামুন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগ এর সদস্য অসীম দেওয়ান সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য উপকারভোগীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জলাবদ্ধতা যেন সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
সব জায়গায় পানি সরে যাওয়ার জন্য জলাধার রাখতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের নদী-নালাগুলো মানুষের জীবনের মতো, এগুলোর প্রবাহ ঠিক রাখতে হবে। মানুষের হার্ট বন্ধ হলে যেমন মরে যায়, নদী-নালার প্রবাহ বন্ধ হলে দেশটাই মরে যায়। শুধু পাড় বাধলেই হবে না, নদীর ড্রেজিংও করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রত্যেক এলাকায় নদী, খাল, বিল, হাওরের পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। নদীপথগুলোও সচল করার পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে নড়িয়ার প্রান্তে থাকা পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, চার বছর আগেও নড়িয়ায় নদীভাঙন ছিল। হাজার হাজার মানুষ ভিটেমাটি হারা হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদৌলতে এখন আর নড়িয়ায় নদীভাঙন নেই। ভাঙন কবলিত নড়িয়া এখন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। গত ৫০ বছরের ভাঙন রোধ হয়েছে বাঁধের কারণে। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে বাঁধ নির্মাণ হয়েছে। এজন্য নড়িয়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।