আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসকরাই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) ইসির একাধিক সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নির্বাচন কমিশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ভোটের পুরো কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হলেও মূলত ভোটগ্রহণের সব দায়িত্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছেই আইনের নির্ধারিত উপায়ে হস্তান্তর করে সংস্থাটি। তাই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের হাতেই থাকে নির্বাচনের সব কর্তৃত্ব।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনে জেলাভিত্তিক রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। আর ডিসি জেলার প্রধান হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তার অধিক কর্তৃত্ব রয়েছে বলে মনে করে কমিশন। যে কারণে প্রতিটি সংসদের সাধারণ নির্বাচনে ডিসিরাই গুরুত্ব পান।
গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, ইসি ৩০০ আসনের জন্য ৩০০ রিটার্নিং কর্মকর্তা যেমন নিয়োগ করতে পারে, তেমনি একজনকে দুই বা ততোধিক আসনের জন্যও নিয়োগ করতে পারে। তবে ৩০০ আসনের জন্য ৩০০ রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানা গেছে।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের জন্য ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করেছিল কে এম নূরুল হুদা কমিশন। ওই সময় ৬৪ জন জেলা প্রশাসক ও দু’জন বিভাগীয় কমিশনারকে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।
এছাড়া সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ছিলেন মোট ৫৮১ জন। এর মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৪৯২ জন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ২৩ জন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ১০, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আটজন, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তিনজন, আইন কর্মকর্তা একজন। আর বাকিদের সরকারের অন্যান্য দফতর থেকে নিয়োগ দিয়েছিল ইসি।
এবার সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন আয়োজিত সংলাপেও বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেয়ার সুপারিশ আসে। এমনকি সাবেক নির্বাচন কমিশনারও এ পরামর্শ দিয়েছিলেন।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। আর ভোটকেন্দ্র হলো ৪২ হাজার ১০৩টি। এক্ষেত্রে প্রায় ১০ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রয়োজন। যাদের নিয়োগ দেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। তাই সংবিধান অনুযায়ী, বর্তমান সংসদের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণ করতে হবে তার আগের নব্বই দিনের মধ্যে। অর্থাৎ গত ১ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে। আর ২৯ জানুয়ারির মধ্যে রয়েছে নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন করতে চায় ইসি। ইতোমধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপতির সম্মতিও পেয়েছে কমিশন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই রেকর্ড করা হতে পারে সিইসির জাতির উদ্দেশে ভাষণ, যেখানে থাকবে ভোটের তফসিলও।