বরিশালের বিসিক শিল্প নগরীর ফরচুন সুজ লিমিটেডের কারখানার শ্রমিকদের বকেয়া দুই মাসের বেতনের দাবিতে চলা বিক্ষোভে গুলি চালিয়েছে আনসার সদস্যরা। তাদের ছোড়া ১০ রাউন্ড গুলিতে ৪ শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এছাড়া পুলিশ ও আনসারের লাঠিচার্জে আরও ১০ শ্রমিক আহত হয়েছে।
এরপর বিক্ষুব্ধরা কোম্পানির বেশ কয়েকটি গাড়ির গ্লাস ভাংচুর করে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণে গিয়ে শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে কাউনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান আহত হয়েছে।
এসময় পাঁচ আনসার সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুর ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরিশাল নগরীর কাউনিয়া বিসিকে ঘটে এ ঘটনা।
গুলিবিদ্ধ চার শ্রমিক হলেন, তামিম (২০), আরাফাত (১৮), মেহেদি (২২) ও রাফসান (২০)।
শ্রমিকরা জানান, দুপুরের দিকে ফরচুন সুজ ফ্যাক্টরিতে বেতন দেওয়া হচ্ছিলো। শ্রমিকদের দাবি তারা গত দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) তাদের এক মাসের বেতনের অর্ধেক দেওয়া হয়। এতে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলনে নামে। এসময় ফরচুন সুজ ফ্যাক্টরিতে কর্তব্যরত আনসাররা শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। এ কারণে শ্রমিকদের ক্ষোভ আরও বাড়তে থাকে। শ্রমিকরা তখন ভাঙচুরের চেষ্টা করে। এসময় আনসার সদস্যরা তাদের উপর গুলি চালিয়েছে এতে চারজন শ্রমিক আহত হন। এসময় পুলিশ উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেয়। শ্রমিকরা ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। ঘটনায় পুলিশের কাউনিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান আহত হন।
শ্রমিকদের হামলায় বিসিকে থাকা কমপক্ষে ১০ টি যানবাহন ভাঙচুর হয়। পরে তিন ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। বর্তমানে ফরচুনসহ আশেপাশের তিনটি কারখানায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনার পর বরিশালের জেলা প্রশাসক ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
আনসার সদস্য ইউসুফ আলী বলেন, শ্রমিকরা কারখানার কাছে বেতন পাবে। তারা আন্দোলনে নেমে প্রথমেই এসে আমাদের আনসার সদস্যদের ক্যাম্পে হামলা চালায়। আমরা উপরের নির্দেশে ১০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করি। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছেন। কেউ নিহত হয়েছেন কিনা জানা নেই।
বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। এখন পর্যন্ত চারজন শ্রমিক আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিস্তারিত পরে জানাবো।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফারুক হোসেন জানান, শ্রমিকরা আন্দোলন করছে এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসছি। শ্রমিকরা কিছু গাড়ি ভাঙচুর করেছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। আমরা শ্রমিক ও মালিক পক্ষ নিয়ে বসছি আশা করছি সুষ্ঠু সমাধান হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।