বহালতবিয়তে ওবায়দুল কাদেরের
বিশেষ প্রতিবেদকঃ
সেতু বিভাগের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) পবন চৌধুরী। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের আস্থাভাজন হিসেবে বেশি পরিচিত। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী হওয়ায়। চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সুপারিশে ওবায়দুল কাদেরের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) হন। ওবায়দুল কাদেরের পিআরও হওয়ার পর তাকে আর পিছে তাকাতে হয়নি। সাংবাদিকদের সাথে দাম্ভিক আচরণ ও অসহযোগিতা ছিল চরম পর্যায়। সাংবাদিকদের ফোনে খুবই কম জবাব দিতেন তিনি। অল্প সময়ে হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থন করা ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত কারকদের অন্যতম পবন চৌধুরী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তথ্য ক্যাডারের বিতর্কিত ৩৬ ব্যাচের কর্মকর্তা ছিলেন পবন। ওবায়দুল কাদেরের আশীর্বাদপুষ্ট ও আস্থাভাজন পবন চৌধুরী বর্তমানে বিপ্লবী সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার জনসংযোগ কর্মকর্তার (পিআরও) দায়িত্ব পালন করছেন। নানান অভিযোগে একাধিকবার এই মন্ত্রণালয় থেকে তাকে সরিয়ে তথ্য অধিদফতর অর্ডার করলেও বারবার অর্ডার পরিবর্তন করিয়ে থাকছেন একই যাগায়।
জানা যায়, চলতি বছরের ১৪ আগস্ট পবন চৌধুরীকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে মৎস্য ও পাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এই মন্ত্রণালয়ে পিআরও দায়িত্ব দেওয়া হয় সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ শফিউল্লাহকে। তথ্য অধিদফতরের ঐ অর্ডার বাতিল করিয়ে ১৭ আগস্ট আবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে অর্ডার করান ওবায়দুল কাদেরের আস্থাবাজন পিআরও পবন চৌধুরী।
তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ থাকায় ২৮ অক্টোবর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র তথ্য অফিসার মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে সংযুক্ত করে তথ্য অধিদফতর। পিআরও হিসেবে আবারও রাখার জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ থেকে ডিও লেটার এনে তথ্য অধিদফতরে জমা দেন পবন চৌধুরী।
তথ্য অধিদফতরে খোজ নিয়ে জানা যায়, ২৮ অক্টোবরের অর্ডার বাতিল করার জন্য পবন চৌধুরী ডিও লেটার জমা দিলেও আগের অর্ডারই বহাল রেখেছেন তথ্য অধিদফতর। তার পরেও তিনি তথ্য অধিদফতরের অর্ডার অমান্য করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে ডিও লেটার চাকরিবিধির পরিপন্থী হওয়া সত্ত্বেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে থাকতে একাধিকবার ডিও লেটার ব্যবহার করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়,১৪ আগস্টের অর্ডারের পর তথ্য অধিদফতরের এক সিনিয়র কর্মকর্তার সাথে কেনো অর্ডার করা হলে কৈফিয়ত চেয়ে অসদাচরণ করেন পবন । সেই কর্মকর্তা তার নিজ জেলার এবং একই সংঘের সদস্য হওয়াতে তিনি এই ব্যাপারটি চেপে যান।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ফ্যাসিস্ট সরকারের পলাতক লোকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ এবং মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান করছেন। এছাড়া মেয়র এবং প্রশাসক নিয়োগে করছেন তদবির বাণিজ্য। বিভিন্ন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অর্থের বিনিময়ে মনোনয়ন পেতে সহযোগিতা অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।