হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলেও প্রতিপক্ষ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে হামলায় আহত হয়ে রোগী মায়া বেগম (৩০) মারা গেছে। এমন অভিযোগ এনে রোগীর ব্যবস্থাপত্র তুলে ধরে বরিশাল নগরীর ১০ নং ওয়ার্ড ভাটার খাল কলোনির তিন জন বাসিন্দা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনকারী তিনজন হলেন- কলোনির মৃত মোঃ হালিম শাহ্ মেয়ে মোসাঃ রশ্নি, মৃত মোশারফ মুন্সির মেয়ে মোসাঃ সুমি বেগম ও সাদ্দাম শাহ এর স্ত্রী মোসাঃ নিপু আক্তার।
লিখিত বক্তব্যে নিপু আক্তার বলেন, ভাটার খাল কলোনির বাসিন্দা মায়া বেগম (৩০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ইউনিট-২ তে ভর্তি (রেজি নং- ৬৮১০৭/৬০) হলেও ওই দিনই সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মায়া আগে থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। যা কলোনির সকলেই জানে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মায়ার মৃত্যুর ঘটনাকে হামালায় আহত হয়ে মারা গেছে বলে প্রচারণা চালাচ্ছে প্রতিপক্ষ।
কলোনিতে একটি মটার নষ্ট হবার পর পানি ব্যবহারের তর্ক-বিতর্ক নিয়ে সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দফায় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। আহতদের মধ্যে মায়া ছিল না। তখন মায়া আহত হয়নি এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। তাছাড়া মারামারিতে আহত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় সার্জারী বা অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডে। একই সাথে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ থেকে আহত রোগীর ভর্তির ব্যবস্থাপত্রে পুলিশ কেসের সিল দেয়া হয়। কিন্ত মায়ার ভর্তির ব্যবস্থাপত্রে পুলিশ কেসের সিল ছিল না। হামলায় আহত হয়ে মায়া মারা যায়নি।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মায়ার মৃত্যুকে অস্বভাবিক করে তোলার কারণ হল- ২৮ অক্টোবর কলোনিতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত হয়েছিল ১০ জন। ঘটনার পরই দুই পক্ষের আহত ৭ জনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছিল। ২৯ অক্টোবর এ হামলার ঘটনায় তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে নামধারী ১৪ জন সহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনকে আসামী করে বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। যার নং-৫০/৬৭৪। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল ইসলাম আসামী ৭ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে।
গ্রেফতারকৃত ৭ জনের মধ্যে ছিল রুহুল আমীন (৪০)। এই রুহুল আমীনই হল- হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী মায়ার স্বামী। রুহুল আমীন ওই দায়েরকৃত মামলায় জেলহাজতে থাকার কারণে আমাদের জেল খাটানোর জন্য হৃদরোগে মারা যাওয়া স্ত্রীকে ‘ফিজিক্যাল অ্যাসল্ট’ বলে লোকমুখে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। যে কেউ শেবাচিম হাসপাতালে রোগী মায়ার ভর্তির ব্যবস্থাপত্র শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তদন্ত করলে হাতেনাতে প্রমাণ মিলবে।
অথচ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার ( ৩ নভেম্বর) রাতে ‘মায়ার মৃত্যুর বিচারের দাবিতে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে প্রতিপক্ষ।’ যা উদ্দেশ্যমূলক। একই সাথে হত্যা মামলা দায়ের করে আমাদেরকে হয়রানী করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রতিপক্ষ।
উল্টো তানিয়ার দায়েরকৃত মামলার আসামীরা আমাদের ঘর বাড়ি ভাংচুর করেছে। ঘটনাস্থল থেকে আমাদের সেনাবাহিনী উদ্ধার করেছিল। আসামীরা নিজেদের ঘরে নিজেরা আগুন দিয়ে আমাদের নাম ফাঁসাতে চায়। এখন হৃদরোগে আক্রান্ত মায়ার স্বাভাবিক মৃত্যুকে অপপ্রচার পূর্বক আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমাদের ৫টি স্পীডবোট আটকিয়ে রাখছে এবং সিরিয়াল কােটে দিয়েছে। প্রতিপক্ষরা বসতঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। যে কারণে আমরা নিজ ঘরে যেতে পারি না।