বরিশালের ব্যস্ততম বানিজ্যিক এলাকা পোর্ট রোডে শত বছরের পুরনো আদম আলী হাজীর পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ বহুতল ভবন বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসীর দাবি, ভবনটি যেকোনো সময় ধসে পড়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে।তবে ভবনটি অপসারণের কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিদিন শত শত মানুষ জীবিকার তাগিদে ভবনের আশপাশে এবং ভেতরে চলাফেরা করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভবনটি স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক আগেই নির্মিত হয়। নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে ভবনটি দীর্ঘদিন আগে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।
তারপরও মালিকগনের সামান্য কিছু ভাড়ার লোভে ভবনের কিছু অংশ রানা প্লাজার মতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ভবনের কয়েকটি কক্ষ গোপন বৈঠকের জন্য ব্যবহার করছে| এলাকাবাসী এবং ব্যবসায়ীরা জানান, ভবনটির অবস্থান এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যেখানে প্রতিনিয়ত মানুষের আনাগোনা লেগেই থাকে। তাদের ভাষ্যমতে, ভবনটি ধসে পড়ার আগে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের প্রাণহানি ঘটতে পারে। এলাকাবাসীর দাবি, ভবন থেকে পড়ে ইতিমধ্যেই একজনের মৃত্যু হয়েছে এবং তার লাশ কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেওয়া হয় বলে শোনা গেছে।
এছাড়া, বিভিন্ন সময় ভবনের ধ্বংসাবশেষের কারণে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনার পরও ভবনটির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিসিসি-এর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, ভবনটি ব্যক্তিমালিকানাধীন। লিখিত অভিযোগ পেলে সরেজমিনে পরিদর্শন করে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর উচ্চতর কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ভবনটি অপসারণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এলাকাবাসী এবং ব্যবসায়ীরা ভবনটি দ্রুত অপসারণের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তাদের মতে, এই ভবনটি ধ্বংসের মাধ্যমে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব এবং এলাকায় স্বাভাবিক কাজকর্ম পুনরুদ্ধার করা যাবে। প্রায় শত বছরের পুরনো এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি এখন একটি সময় বোমার মতো কাজ করছে।
এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভবনটি দ্রুত অপসারণ করা অত্যন্ত জরুরি। সময়মতো পদক্ষেপ না নিলে এর ফলাফল হতে পারে রানা প্লাজার মতো ভয়াবহ। শেষে কে নেবে এর দায়?