বরিশাল থেকে লঞ্চে ঢাকা যাবার পথে চলন্ত লঞ্চ থেকে যুবকের নদীতে ঝাঁপ দিল, রিফাত মাহমুদ।
বরিশাল থেকে লঞ্চে ঢাকা যাবার পথে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে এক যুবক নিখোঁজ হয়েছে। ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও ওই যুবকের কোনো খোঁজ মেলেনি। নিখোঁজ যুবকের নাম শেখ রিফাত মাহমুদ। তিনি বরিশাল নগরীর কালিবাড়ি রোডের আসলাম মাহমুদের ছেলে এবং বিএম কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী।
রোববার (১০ এপ্রিল) রাতে বরিশাল নৌ অঞ্চলের এডিশনাল এসপি হুমায়ুন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ৭ মার্চ রাতে বরিশাল থেকে শুভরাজ-৯ লঞ্চে ঢাকায় যাত্রা করেন রিফাত। একটি কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে তিনি ঢাকায় যাচ্ছিলেন।
এরমধ্যে রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাইমচর এলাকায় লঞ্চ থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি। কি কারণে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন এ বিষয়ে এখনও জানা যায়নি। লঞ্চের সিসি টিভি ফুটেজ থেকে রিফাতের নদীতে ঝাঁপ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় রিফাতের বাবা বরিশাল কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি আমরা রিফাতকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। ঢাকা ও বরিশাল নৌ পুলিশ একসাথে এ বিষয়ে কাজ করছে। এ ছাড়া লঞ্চের স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত রিফাতের সন্ধান পাব।
রিফাতের বাবা শেখ আসলাম মাহমুদ বলেন, বিএম কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে মাষ্টার্স সম্পন্ন করেছে সে। আবুল খায়ের গ্রুপ অব কোম্পানিতে তার নিয়োগ হয়েছে। গত শনিবার সেখানে যোগদানের কথা ছিল। চাকুরিতে যোগদান করতে শুক্রবার বরিশাল থেকে শুভরাজ-৯ লঞ্চে ঢাকা রওনা হয়।
আসলাম মাহমুদ বলেন, আমার ছেলে বলে বলছি না, খুব ভাল ছেলে ছিল সে। ভদ্র ও ধার্মিক ছিল। সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত ও রোযা রাখত। তার মধ্যে কখনো অস্বাভাবিক কিছু দেখিনি। যাওয়ার সময় আমার ও তার মায়ের কাছ থেকে দোয়া নিয়েছে। তার হাতে ও মায়ের কপালে চুমু দিয়েছে।
যাওয়ার সময় আরো বলেছে, ঢাকা গিয়ে যদি টাকার প্রয়োজন হলে পাঠিয়ে দিও। আমিও তাকে বলেছি, তুমি জানালে পাঠিয়ে দেব। কেন, কি হলো আমি বুঝতে পারছি না। ভাইয়ের সন্ধানে স্পিড বোট নিয়ে মেঘনা নদীতে ঘুরছে নিখোঁজ রিফাতের ছোট ভাই শেখ রাফসান মাহমুদ সংগ্রাম। সন্ধ্যা সাতটার দিকে সংগ্রাম জানান, নদীর বিভিন্ন স্থানে তাকে খোঁজা হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী মানুষদের কাছে নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধান জানতে চাচ্ছেন তিনি।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আমিও ভিডিও দেখেছি। যে স্থান থেকে রিফাত নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন, সেই স্থান চিহিৃত করার চেষ্টা করছেন জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ ছাড়াও রিফাতের সন্ধান পেতে প্রত্যেকটি থানায় বার্তা দেয়া হয়েছে। কি কারণে তিনি নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে তার কারণ জানা যায়নি।