আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী হয়েছেন আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)। তিনি বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে এবং ৭৫ এর ১৫ই আগস্ট ট্রাজেডির একজন আহত ব্যক্তি। বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ তাঁর ভাতিজা। খোকন সেরনিয়াবাত মনোনয়ন পাবার পরই সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন৷
দলের প্রবীণ ও ত্যাগী নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তাঁর মনোনীত হবার ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে ছিল চমক। দিনশেষে দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য করছে দলীয় নেতাকর্মীরা। আগামী ১২ই জুন অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের দাবিদার ছিলেন বর্তমান মেয়র সহ ৭ জন।
আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত) শনিবার দুপুরে আজকের বার্তাকে বলেন, আমি প্রথমেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। তাঁর সিদ্ধান্তে বরিশালের আপামর জনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে।দলের প্রকৃত কর্মীরা বিগত দিনেও আমার সাথে ছিল সামনেও থাকবে বলে মনে করি। বরিশালের উন্নয়নে অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।
আর দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নেতাকর্মীরা কাজ করবেন বলে জানান মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি এড. একে এম জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, দল যাকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করবে তার সঙ্গেই কাজ করবো আমরা। আগেও বলেছি নৌকা প্রতীকের বিজয় অর্জনে কাজ করবে স্থানীয় আওয়ামীলীগ।
জেলা আওয়ামীলীগের প্রবীণ সদস্য ও নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ মোঃ আনিসুর রহমান দলীয় মনোনীত প্রার্থীর ব্যাপারে বলেন, আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ আওয়ামীলীগের রাজনীতির জন্য অনেক ত্যাগ করেছেন। দল তার প্রতিদান দিয়েছে তাকে মেয়র নমিনেশন দিয়ে। আশা করছি বিপুল ভোটে তিনি জয়যুক্ত হবেন। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ করবো।
এদিকে নগরীর ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার বলেন, দল যোগ্য মানুষকেই মূল্যায়ন করেছে বলে মনে করি। বরিশালবাসীও তাদের ভোটের মাধ্যমে তার বিজয় নিশ্চিত করবে বলে আশা করছি। একই সঙ্গে এখন থেকে দলের প্রকৃত ও ত্যাগী কর্মীরাও মূল্যায়িত হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রতীক পেতে নমিনেশন ফরম কিনেছিলেন মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, দিনশেষে আমরা সবাই এক পরিবারের সদস্য। দল যাকে মনোনীত করেছে তাকে বিজয়ী করতে কাজ করবো।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা অমিত হাসান রক্তিম বলেন, শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই দলের সকল পর্যায়ের নেতা কর্মীর জন্য চূড়ান্ত। আমরাও সেই সিদ্ধান্তের বাইরে না। দল যাকে মনোনীত করেছে বরিশালের ছাত্রলীগও তার সঙ্গেই কাজ করবে।
তবে সাধারণ মানুষের কাছে বিষয়টি ছিল চমকের। নগরীর কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক মোসলেম শিকদার বলেন, যিনি মেয়র পদে আওয়ামীলীগের নমিনেশন পেয়েছেন তাকে সেভাবে বরিশালে দেখি নি। তবে যেকোনো দল তো অনেক ভেবেচিন্তে সঠিক মানুষ বাছাই করার চেষ্টা করে৷ আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর ব্যাপারেও সেটির ব্যত্যয় ঘটেছে বলে মনে করি না৷
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গতকাল শনিবার দলের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়।সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। চুলচেরা বিশ্লষণ শেষে এ প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়।বিভিন্ন জরিপের ভিত্তিতে প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয় বলে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো দাবি করেছে।